বিদেশি সিরিয়ালে দর্শক কেন আগ্রহী?

প্রথম প্রকাশঃ জুলাই ৩, ২০১৫ সময়ঃ ১২:৫৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:০০ অপরাহ্ণ

জহির উদ্দিন মিশু

indian_chenalসম্প্রতি বাংলাদেশের নাটকের মান পড়ে যাওয়ার কারণে নাকি, দর্শকদের একটি বিশাল অংশ দেশের নাটক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যাদের অনেকেই এখন ভিনদেশি সিরিয়ালের ভক্ত। কোথাও কেউ নেই-এর বাকের ভাই, সংশপ্তকের কানকাটা রমজান কিংবা রঙের মানুষের রাখাল দুবলো, প্রতিটি চরিত্রই আজও যেন জীবন্ত।

কিন্তু, হঠাৎই যেন ছন্দপতন। এখন আর নাটকের প্রতি মানুষের আগের সেই উন্মাদনা নেই। যা নিয়ে সমালোচনার ফুলঝুড়ি ছোটে, বিশেষজ্ঞ-বিশ্লেষকসহ বিভিন্ন মহলে। নাট্য ব্যক্তিত্বরা বলছেন, নির্মাণের মতো জটিলকাজে অদক্ষদের ভিড়, সস্তা গল্প আর চ্যানেলগুলোর অতি মুনাফার আকাঙ্খাই এর কারণ। তারা বলছেন, নির্মাতাদের খ্যাতির পেছনে না ছুটে ভালো মানের নাটক কিনতে হবে টিভি চ্যানেলগুলোকে। এদিকে নাটক তৈরির বাজেট কমেছে দিন কি দিন। মান যতই ভালো হোক, দেড় থেকে সোয়া দুই লাখের বেশি টাকা পান না নির্মাতারা। সাথে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট শিল্পী নেয়ার শর্ততো আছেই।তাই ঘুরে ফিরে, একই মুখ-একই গল্প। খরচ কমাতে ঘরের ভেতরেই চলে বেশিরভাগ দৃশ্যায়ন।

মজার ব্যপার হলো, সামাজিক বৈষম্যের মতো এখানেও আছে বিস্তর অনিয়ম আর স্বজনপ্রীতি। অভিযোগ আছে, চ্যানেল কর্তৃপক্ষের প্রিয় পাত্রদের ক্ষেত্রে বাজেটের যেমন বালাই থাকে না, তেমনি থাকে না শর্তও। এছাড়া, নামী কয়েকজন পরিচালকের নাটক বিক্রি হয়, ৭-৮ লাখ টাকায়। যার মান নিয়েও আছে বিতর্ক।

অপরদিকে, দেশীয় গণমাধ্যমের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন তরুণরা। প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন মাধ্যম সর্বত্রই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বস্তুনিষ্ঠ না থেকে পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশনের কারণে দেশের সচেতন এই অংশটি সংবাদের বিকল্প উৎসের দিকে ঝুঁকছে।

ফেসবুক, টুইটার, ব্লগের মতো অপেক্ষাকৃত কম নির্ভরযোগ্য সামাজিক মাধ্যমগুলো হয়ে উঠছে তাদের সংবাদের প্রধান উৎস। এতে তারা অনেক সময় গুজবে বিশ্বাস করছে আবার বেশিরভাগ সামাজিক মাধ্যম বিদেশি হওয়ায় দেশের যুব সমাজ বিদেশি চিন্তা চেতনা, ধ্যান-ধারণাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। বিদেশি টিভি কিংবা অনলাইন মাধ্যমগুলোকেও তারা বেছে নিচ্ছে সংবাদের উৎস হিসেবে।

এ প্রসঙ্গে চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, ইদানীং যে বাজেটে একটি নাটক নির্মিত হচ্ছে তা আসলে কিছুই না। এত কম বাজেটে নাটক বানাচ্ছেন বলে নির্মাতাদের মুনশিয়ানার প্রশংসাও করেছেন রিয়াজ। তিনি আরো বলেন, চলচ্চিত্রে যখন আমি অনেক ব্যস্ত তখনো নাটকের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কিন্তু সে সময় নাটকের বাজেট এত কম ছিল না। বাংলাদেশে সমস্ত কিছুর দাম বাড়ছে। দিন দিন যে হারে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, চাল-পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, জীবনযাত্রার খরচ বাড়ছে-ঠিক যেন পাল্লা দিয়ে নাটকের বাজেট কমে আসছে! আর যে কারণে সম্প্রতি বাংলাদেশের নাটকের মানও কমে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু বাণিজ্যিক নয়; ভালো নাটক আর রুচিশীল অনুষ্ঠান তৈরির পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসতে হবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G